বিল্ডিং এস্টিমেট: বিল্ডিং এস্টিমেট তৈরির ধাপসমূহ।

একটি বিল্ডিং নির্মাণের জন্য এস্টিমেট বা ব্যয় নির্ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি প্রকল্পের বাজেট নির্ধারণ, প্রয়োজনীয় উপকরণের হিসাব এবং সময় ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করে। বিল্ডিং এস্টিমেট তৈরির জন্য বিভিন্ন ধাপ অনুসরণ করতে হয়, এবং প্রতিটি ধাপে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও শ্রমের সঠিক হিসাব করা হয়।

নিচে বিল্ডিং এস্টিমেট তৈরির ধাপগুলো ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো।

বিল্ডিং এস্টিমেট তৈরির ধাপসমূহ

১. প্রকল্পের নকশা ও বিস্তারিত যাচাই

প্রথমে, বিল্ডিংয়ের নকশা বা ব্লুপ্রিন্ট দেখে বিভিন্ন উপকরণের মাপ ও পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। প্রকল্পের প্রকৃত প্রয়োজন ও আকার অনুযায়ী:

  • বিল্ডিংয়ের আয়তন, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা
  • কক্ষ ও অন্যান্য স্থানের বিন্যাস
  • ফাউন্ডেশন, কলাম, বিম, এবং ছাদের বিবরণ

এসব যাচাই করা হয়।

২. উপকরণের পরিমাণ নির্ধারণ

নকশা অনুযায়ী প্রতিটি উপাদানের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হয়। বিল্ডিংয়ের জন্য ব্যবহৃত প্রধান উপকরণগুলো হলো:

  • কংক্রিট: ফাউন্ডেশন, কলাম, বিম এবং ছাদের জন্য কংক্রিটের পরিমাণ নির্ধারণ।
  • স্টিল: স্টিল রেইনফোর্সমেন্টের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ এবং দৈর্ঘ্য।
  • ইট, বালি, ও সিমেন্ট: দেয়াল ও অন্যান্য নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ইট, বালি, এবং সিমেন্টের পরিমাণ।
  • দরজা ও জানালা: দরজা ও জানালার জন্য কাঠ, গ্লাস, এবং অন্যান্য উপকরণ।
  • ইলেকট্রিক্যাল ও প্লাম্বিং: বৈদ্যুতিক ও স্যানিটারি উপকরণ।

৩. উপকরণের হার নির্ধারণ

বাজারে প্রতিটি উপকরণের বর্তমান দাম অনুসারে একক (per unit) হিসেবে খরচ নির্ধারণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ:

  • কংক্রিটের প্রতি কিউবিক মিটার দাম
  • ইটের প্রতি ১০০০ পিসের দাম
  • স্টিলের প্রতি কেজি বা টনের দাম
  • দরজা-জানালার কাঠের দাম

৪. কাজের পরিমাণ ও শ্রম খরচ

প্রতিটি কাজের জন্য শ্রমিকদের সংখ্যা, তাদের কাজের ধরণ এবং সময় অনুযায়ী শ্রম খরচ নির্ধারণ করা হয়। উদাহরণ:

  • মেসন, লেবার, কার্পেন্টার, ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার ইত্যাদির মজুরি।
  • শ্রমিকদের জন্য দিন বা ঘন্টার মজুরি নির্ধারণ।

৫. মেশিন ও সরঞ্জাম ভাড়া

প্রকল্পে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ভাড়া হিসাব করতে হয়। যেমন:

  • মিক্সার মেশিন, ক্রেন, বুলডোজার ইত্যাদি।
  • যদি সরঞ্জামগুলি ভাড়া করতে হয়, তবে এর দৈনিক বা মাসিক ভাড়া হিসাব করতে হবে।

৬. কনটিনজেন্সি বা অতিরিক্ত খরচ

অনাকাঙ্ক্ষিত খরচ বা যেকোনো সমস্যা সামলানোর জন্য কনটিনজেন্সি খাতে ৫-১০% বাজেট রাখা হয়। এটি প্রকল্পে সম্ভাব্য খরচকে সুরক্ষিত রাখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *